শুক্রবার দুপুর ১২:১৬

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল

ইউনানি চিকিৎসক পরিচয়ে লুকিয়ে ছিলেন মোসলেহ উদ্দীন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরেক পলাতক খুনি রিসালদার (বরখাস্ত) মোসলেহ উদ্দীন খান ভারতে আটক হয়েছেন বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ‌্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার একটি আধাশহরে ইউনানি চিকিৎসক পরিচয়ে লুকিয়ে ছিলেন মোসলেহ উদ্দীন। মূল নাম লুকিয়ে এবার এলাকায় ‘ডাক্তার দত্ত’ নামে পরিচয় গড়ে তোলেন। আর ভালো নাম হিসেবে ব্যবহার করতেন ‘নাভেদ’। তবে বাংলাদেশে পরিবারের সদস্যরাও তার প্রকৃত নাম বাদ দিয়ে ‘রফিকুল ইসলাম খান’ হিসেবে প্রচার করতেন। সে নামেই করেছেন পরিচয়পত্রও।

সূত্র জানায়, মোসলেহ উদ্দীন পশ্চিমবঙ্গের গোবরডাঙ্গার ঠাকুরনগর এলাকায় দীর্ঘ ২০ বছরের বেশি সময় ধরে ভাড়া থাকতেন। এলাকার চাঁদপাড়া রোডের একটি বাড়িতে সর্বশেষ তিনি অবস্থান করছিলেন।

বাংলাদেশ সরকারের হাতে সর্বশেষ মোসলেহ উদ্দীনের বিষয়ে তথ্য ছিল জার্মানিতে পালিয়ে থাকার। তাকে শনাক্ত করতে এবং দেশে ফিরিয়ে আনতে ২০১৬ সালে ইন্টারপোলের কাছে ছবি পাঠানো হয়। এর আগে ২০০৯ সালেই বঙ্গবন্ধুর পলাতক ছয় খুনির বিষয়ে রেড অ‌্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল।

মোসলেহ উদ্দীনের আটকের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘মোসলেহ উদ্দীনের আটকের বিষয়টি আমরা গণমাধ্যমের মাধ্যমে জেনেছি। কিন্তু অফিসিয়াল কোনো তথ্য ভারতের পক্ষ থেকে আমাদের হাতে আসেনি। আমরা আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করছি।’

মোসলেহ উদ্দীনের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগর রেলস্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মের পেছনে একটি বাড়িতে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। তবে তারা দেশটির স্থায়ী বাসিন্দা কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, গত ৬ এপ্রিল ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়া বঙ্গবন্ধুর অপর খুনি আব্দুল মাজেদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মোসলেহ উদ্দীন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। মাজেদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মোসলেহ উদ্দীনের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন গোয়েন্দারা।

এরআগে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তদন্ত শুরু হলে তার বাড়িসহ বেশকিছু সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া যায়, সম্পত্তির হিসাব লুকিয়েছিল তার পরিবার। যে কারণে পরবর্তী সময়ে তারা নরসিংদী জেলায় আবার বসবাস শুরু করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর নরসিংদী জেলার শিবপুরের দত্তেরগাঁও এলাকায় বাড়ি করে স্থায়ীভাবে বসবাস করতো মোসলেহ উদ্দিনের পরিবার। আর মোসলেহ উদ্দিন বেশকিছু রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব পান।

১৯৭৭ সালের দিকে (সম্ভাব্য) তিনি বঙ্গভবনে দায়িত্বপালন করেন। এরপর তেহরান ও জেদ্দা দূতাবাসেরও দায়িত্ব পান।  ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি লুকিয়ে যান।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে