আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে নরসিংদীতে বিক্রির জন্য ৫০ হাজারেরও বেশি পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। এ মুহূর্তে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
প্রতি বছরের মতো এবারো খামারিরা সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মোটাতাজা করেছেন। তবে মহামারি করোনার কারণে ন্যায্য দাম পাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন খামারিরা।
খামারিরা বলছেন, তাদের পালিত পশুগুলোর বেশির ভাগই ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা মূল্যের। এ পশুগুলোর অধিকাংশই মধ্যবিত্তদের কাছেই চাহিদা পেতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে মধ্যবিত্তরাই রয়েছেন নানান সঙ্কটে। অনেকেই হয়ত এবার কোরবানি নাও দিতে পারেন। ফলে পশুর চাহিদা এবার কম থাকবে বলে মনে করছেন তারা।
নরসিংদী জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ঈদ উপলক্ষে এ জেলায় ৬টি উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৬ হাজার ৬৩৮জন খামারি ৫২ হাজার ২৫১টি পশু মোটাতাজা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ষাড় ২৬ হাজার ৯১৫টি, বলদ ৮ হাজার ৮৫টি, গাভী ৪ হাজার ৬৯২টি, মহিষ ১ হাজার ৩১টি, ছাগল ৯ হাজার ১০৯টি, ভেড়া ২ হাজার ৩৪৯টি ও অন্যান্য পশু ৭০টি।
খামারিরা জানান, প্রতি বছরই ঈদ এলে গরু বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন তারা। ছোট বড় খামারের পাশাপাশি কৃষকরাও ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করে থাকেন। অন্যান্য বছর ক্রেতারা কোরবানির একমাস আগে থেকে খামারিদের সাথে যোগাযোগ করতেন পছন্দের পশুটি কেনার জন্য। কিন্তু এবার সে অবস্থাটি নেই। ক্রেতাদের মিলছে না কোন সারা। বাজারে নিলেও ক্রেতা মিলবে কিনা। ক্রেতা মিললেও ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে কিনা। এমন নানা দুর্ভাবনায় খামারিরা। পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই তাদের।
রায়পুরা উপজেলা চরমধুয়া গ্রামের গ্রিন এগ্রো ফার্মস এর মালিক আহসান শিকদার জানান, এবার তাদের খামারে দেশিয় জাতের ৫০টি গরু পালন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে এসব গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের মতো এ বছর ক্রেতাদের তেমন একটা আগ্রহ পাওয়া যাচ্ছে না।
একই এলাকার গরু খামারি মুজিবর রহমান জানান, তার খামারে ৫২টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি গরুকে কাঁচা ঘাস, খড়, তিলের খৈল, ছোলার খৈল, মসুুরি ডালের খৈল, মটরসহ বিভিন্ন ধরণের সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হয়েছে।
বেলাব উপজেলার দেওয়াচর চর গ্রামের বিসমিল্লাহ গরু খামারি জজ মিয়া জানান, এ ঈদে তার খামার থেকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটা তাজা করা দুটি গরু বিক্রি করা হবে। একটির মূল্য ৫ লাখ টাকা ও অপরটির মূল্য ৪ লাখ টাকা। যদি এ ঈদে বিক্রি না করতে পারেন তাহলে তিনি লোকসানে পরবেন।
একই উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের সল্লাবাদ গ্রামের রাজিব প্রধান বলেন, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ৫টি অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরু লালন পালন করছেন। এ ঈদে দুটি ষাড় বিক্রি করে দিবেন। যার একটির মূল্য ১৫ লাখ ও অপরটির মূল্য ১২ লাখ টাকা। করোনার কারণে আশানুরূপ বিক্রি করতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।