শনিবার ভোর ৫:১০

২৩শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি

৯ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ বসন্তকাল

করোনায় আক্রান্ত রোগীর মৃতদেহের সৎকারে প্রশাসন

রাত ০২:৪৯ মিনিট। আবছা অন্ধকার। আকাশ ও জমিনে আলো – আঁধারি খেলা। দমকা বাতাস। মেঘনা নদীর দক্ষিণ কূল। বেপারিপাড়া শ্মশান ঘাট। চারিদিক নিস্তব্ধ হলেও দূরে মিটিমিটি আলোর রেখা মৃদু দুলছে। শ্মশানপাড়ের বটগাছের শাখা- প্রশাখা,পত্রপল্লব দমকা হাওয়ায় নেড়ে উঠছে প্রতিনিয়ত, যেন স্বজনহারা পৃথিবীর মত হু হু করে ডুকড়ে গুমড়ে বিলাপ করছে। তার সাথে স্বজনহীন এই প্রান্তরে তিনটে কুকুরের বুকফাটা আহাজরিই যেন মধ্যরাতের অব্যক্ত একমাত্র রোনাজারি।

বটতলায় জীর্ণ ভ্যান। উপরে সৃষ্টির সেরা জীব- যা ক্ষনিক আগেই হয়েছে অজীব।
শ্মশানে চলছে ভীত-সন্ত্রস্ত অন্তিম প্রস্তুতি।
দু’জন শবদাহের প্রস্তুতি শেষ করলো। শবের একমাত্র উত্তরসুরি অগ্নিমুখ করেই দুরে সরে গেলেন। ধিকে ধিকে জ্বলতে থাকল শবাহ্নি। যেন চাপা ভয় থেকে হাফছেড়ে বাঁচা গেল।

কিন্তু এ কেমন বেঁচে যাওয়া। নাকি মরে গিয়েই বেঁচে গেলেন বলরাম দাস।

বলরাম দাস। বয়স ৪৫ বছর। বৌয়াকুড়ের বাসিন্দা।ক্ষুদ্রব্যবসায়ী। প্রায় ৮-১০ দিন থেকে জ্বরে, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত। ১৬ তারিখে ডায়রিয়া শুরু হয়। কিন্তু করোনা সংকটের এ সময়ে তিনি অসুস্থের তথ্য গোপন করেন। পরে রাত ১০ টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যেই সে মৃত্যুবরণ করেন।

মৃত্যু খবর জানাজানি হওয়ার সাথে সাথেই নিকটজন ও প্রতিবেশিরা ভয়ে কাছে আসেনি। এমনকি দাহ করার জন্য লোকও পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এ সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম তরিৎ স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

মান্যবর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং দেশের অভ্যন্তরে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সম্মানিত সভাপতি সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন মহোদয়ের নির্দেশে কুইক রেসপন্স টিমের আহবায়ক ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ শাহ আলম মিয়া নেতৃত্বে বলরাম দাসের সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়। মোঃ শাহ আলম মিয়া নিজে উপস্থিত থেকে রাত ১১:৩০ – ০৩:৩০ টা পর্যন্ত চলমান দাহকার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ সময় জেলা পুলিশের দুই জন প্রতিনিধি,দুইজন সাংবাদিক এবং বলরাম দাসের একজন প্রতিবেশি উপস্থিত ছিলেন।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে