শুক্রবার রাত ২:২৫

২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল

স্কুল থেকে বের করে দেয়ার অপমানে আত্মহত্যা!

ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে না যাওয়ার অপরাধে স্কুল থেকে বের করে দেয়ার অপমান সইতে না পেরে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় সাবিনা ইয়াসমিন রিয়া (১২) নামের এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে পৌর এলাকার চকসিংড়া মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত রিয়া সিংড়া দমদমা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সে একই এলাকার গোলাম রাব্বানীর মেয়ে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিক্ষার্থী রিয়াকে ক্লাস থেকে বের করে দেয়া হয়নি। এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

স্কুল ও মৃতের পরিবার সূত্র জানায়, সিংড়া দমদমা বালিকা বিদ্যালয়ে অন্যান্য দিনের মতো রোববার সকালে অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয়। অ্যাসেম্বলিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীদের মতো অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরাও ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে আসেনি।

পরে সবাইকে পরবর্তী দিন থেকে ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে আসতে বলে প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু। অ্যাসেম্বলি শেষে সবাই যে যার মতো ক্লাসেচলে যায়।

পরে ওই স্কুলের শিক্ষক আবু হানিফ ৬ষ্ঠ শ্রেণির রিয়াসহ তিনজনকে বাড়ি থেকে জুতা পরে আসতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থী রিয়া জুতা পরার জন্য বাড়িতে গিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে নিজঘরে আত্মহত্যা করে।

পরে পরিবারের লোকজন ঘরের জানালা ভেঙে রিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

রিয়ার বাবা গোলাম রাব্বানী বলেন, সকালে মেয়ে স্কুল থেকে চলে আসার কারণ জানতে চাই। মেয়ে বলে স্কুল ড্রেসের সঙ্গে জুতা পরে না যাওয়ার কারণে তাকে জুতা পরে স্কুলে যেতে বলা হয়েছে। আমিও মেয়েকে বলি তুমি জুতা পরে না গেলে তো স্কুল থেকে বের করেই দেবে, কেন জুতা পরে যাওনি। পরে মেয়ে নিজ ঘরে প্রবেশ করেই দরজা-জানালা আটকে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।

ক্লাসের শিক্ষক আবু হাসান বলেন, অন্যান্য দিনের মতো রোববারও স্কুলের অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয়। এতে কে কে ড্রেস এবং অন্যান্য জিনিস কেন পরে আসেনি সে বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান এবং সর্তক করে দেন। পরে এই বিষয়ে ক্লাসে গিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির তিনজন ছাত্রী ড্রেস পরে না আসার বিষয়ে সতর্ক করে দেয়া হয়। পরে ক্লাস শেষ করা হয়। তবে ক্লাস থেকে রিয়াকে বের করে দেয়া হয়নি।

সিংড়া দমদমা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস আক্তার বানু বলেন, অ্যাসেম্বলিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণির মতো অন্য ক্লাসে ৭-৮ জন শিক্ষার্থী জুতা পরে আসেনি। পরে তাদের জুতা পরে আসার জন্য বলা হয়। কেউ কেউ বাড়ি থেকে জুতা পরে এসে ক্লাসেও যোগ দেয়। কিন্তু রিয়া নামের ওই শিক্ষার্থী কেন এমন ঘটনা ঘটালো তা বোধগম্য নয়।

এ বিষয়ে সিংড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার ঘটনা শুনেছি। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছে সে বিষয় এখনও পরিষ্কার নয়।এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখা হবে।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে