মঙ্গলবার বিকাল ৪:৫২

১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল

একটু ঠাঁই ‘এক টাকার দোকান’

অসহায় মানুষের জন্য লকডাউনের শুরু থেকেই কাজ করে আসছে সাভারের একটি সামাজিক সংগঠন ‘ছবিঘর’। সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জীবাণুনাশক ছিটানো থেকে শুরু করে অসহায় মানুষের ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে সাভারের এই সামাজিক সংগঠন। শুধু তাই নয়, রাস্তার অবলা প্রাণীগুলোর জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে লকডাউনের শুরু থেকেই।

মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে উপহারের নামে পৌঁছে দিয়েছে খাবার। করোনাকালীন মানুষ যাতে ঘরে বসে থেকে একাকিত্ব বোধ না করে তাই তারা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছে বই, দাবা, লুডুসহ আরো অনেক উপহার। কিন্তু রমজান মাস উপলক্ষে এবার তারা শুরু করেছে ব্যতিক্রমী এক কার্যক্রম।

২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে রমজান মাস। এই উপলক্ষে সাভারে তারা স্থাপন করেছে ‘এক টাকার দোকান’ নামে একটি দোকানের। এই দোকান থেকে যে কেউ এক টাকার বিনিময়ে ছোলা, মুড়ি, বেসন, ময়দা, চিনিসহ অনেক পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। যেহেতু করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোয়ার অভ্যাস তৈরি করা সবচেয়ে বেশি দরকার, তাই তারা প্রতিটি ক্রেতাকে একটি করে সাবান উপহার দিচ্ছে। সাভারের বাইরেও এই এক টাকার দোকানের কার্যক্রম বরিশালের মঠবাড়িয়াতেও এই ভিন্নধর্মী কার্যক্রম চালু করেছে সংগঠনটি৷

ছবিঘরের এই কার্যক্রম অর্থাৎ এক টাকার দোকান চলবে পুরো রমজান মাস। সাভারের বিভিন্ন এলাকায় সংগঠনের সেচ্ছাসেবীরা ভ্যানে করে ইফতারের জন্য প্রয়োজন এমন কিছু কাঁচামাল বিক্রি করেছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তারা সবাইকে জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণু মুক্ত করছে, তারপর সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে তারা তাদের এই দোকানে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করছে। শুধু তাই নয়, তারা প্রতিটি ক্রেতাকে কম খরচে টিস্যু পেপার দিয়ে একবার ব্যবহার্য মাস্ক বানানোর প্রশিক্ষণও দিয়েছে।

ছবিঘরের সভাপতি প্রিন্স ঘোষ তাদের এই কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের এই কার্যক্রম পুরো রমজান মাসজুড়ে চলবে এবং কেউ চাইলে ফোন করে এই পণ্য বাসায় হোম ডেলিভারি দিতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘অসহায় মানুষের জন্য আমাদের এই ব্যতিক্রমী কার্যক্রম। এই দোকান থেকে যেকেউ এক টাকার বিনিময়ে ছোলা, মুড়ি, বেসন, ময়দা, চিনিসহ আরও অনেক পণ্য ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া  খাবারের পাশাপাশি ঈদে নতুন জামাও এক টাকার বিনিময়ে বিক্রির পরিকল্পনা করছি আমরা, যাতে অসহায় মানুষগুলো ঘরের মধ্যেই আনন্দে নতুন জামা পরে ঈদ পালন করতে পারেন।’

এক টাকা নেওয়ার কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যাতে মনে না করে এটা তাদের ত্রাণ বা দান করা হচ্ছে, তাই আমরা নামমাত্র মূল্য হিসেবে এক টাকা নিচ্ছি।’

‘আমরা দোকান দিয়েছি আর মানুষ আমাদের দোকানে ক্রেতা হয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে আসছে, এতে লজ্জার কিছু নেই। আমি বিক্রেতা হিসেবে তাদের কাছে আমাদের পণ্য বিক্রি করছি’, বলেন তিনি।

অনেক ক্রেতাও এতে খুশি। অনেকেই বলছে এই কার্যক্রমের জন্য তারা হয়তো নিশ্চিন্তে কাটাতে পারবে পবিত্র এই রমজান মাস। তাই পুরো দেশে ধনীরা যদি এমন ব্যবস্থা করেন, তাহলে করোনাকালীন অসহায় একটু হলেও সহায় খুঁজে পাবেন।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে