শুক্রবার রাত ৯:৩৯

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৯ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবস্থানগত কারণে কৃষি সমৃদ্ধ জেলায় পরিণত হয়েছে নরসিংদী

হেপি, মনোহরদী-নরসিংদী, প্রতিনিধিঃ- ঢাকা বিভাগের মধ্যে নরসিংদী একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। নরসিংদী সদর, শিবপুর, পলাশ, মনোহরদী, রায়পুরা ও বেলাব উপজেলা এই ৬টি উপজেলা নিয়ে নরসিংদী জেলা। ১৯৭৮ সালে নরসিংদী মহকুমা এবং ১৯৮৪ সালে নরসিংদীকে একটি পূর্ণাঙ্গ জেলায় পরিণত করা হয়। দক্ষিন পূর্বাঞ্চল মেঘনা বিধৌত নিম্নভূমি, পশ্চিমাঞ্চল উচ্চ সমতল ভূমি, উত্তরাঞ্চলে ছোট ছোট পাহাড়, টিলা, টেক নয়নাভিরাম অরণ্য আবরণে আবৃত। এ জেলার উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ি ভূমি বাংলাদেশের আদি ভুমির অন্তর্গত। রাজা নরসিংহের নাম থেকে নরসিংদী নাম করন করা হয়।

নরসিংদী জেলার একটি বিশেষ ও উল্লেখযোগ্য ঐতিহ্য হচ্ছে তাঁত শিল্প। প্রায় আড়াইহাজার বছরের প্রাচীন নগরীর প্রত্ননিদর্শন উয়ারী-বটেশ্বর বেলাব উপজেলায় অবস্থিত। শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে যারা আলোকবর্তিকা প্রজ্জলিত করে নরসিংদীকে ঐতিহ্য মন্ডিত করেছেন তারা হলেন উপমহাদেশের প্রথম বাঙালি আই সি এস স্যার.কে.জি. গুপ্ত, পবিত্র কোরআনের বাংলা অনুবাদক ভাই গিরিশ চন্দ্র সেন।আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি শামসুর রহমান, আহমদুল কবির মনু মিয়া (সম্পাদক,দৈনিক সংবাদ ), উনসত্তরের গন আন্দোলনের শহীদ’ আসাদ’ এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান নরসিংদী জেলার কৃতি সন্তান।

নরসিংদীতে রয়েছে ৪টি নদ-নদী যেমন: মেঘনা,শীতলক্ষা,পুরাতন ব্রম্মপুত্র,আড়িয়ালখাঁ নদী জেলাটিকে করেছে সুজলা, সুফলা,শশ্য-শ্যামলা। নদ-নদী গুলো কোনটা উত্তাল,কোনটা শান্ত – স্নিগ্ধ। নরসিংদী ঐতিহ্য হওয়ার আরো কারনও রয়েছে বিশেষ করে কলা, কাঁকরোল, শশা, সিম, বেগুন, ধান, পাট, আলু এবং লেবু চাষ করে। ফলের দিক থেকে :- কাঁঠাল, আনারস, পেয়াড়া, লিচু এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে লটকন চাষ। উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য নরসিংদী বাংলাদেশের একটি অন্যতম কৃষি সম্মৃদ্ধি জেলা হিসাবে সু-পরিচিত। লটকন একপ্রকার দেশিয় ও অপ্রচলিত ফল, যা অত্যন্ত পুষ্টি ও ভরপুর। যার ইংরেজি নাম হলো Burmese grape ও বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea saipda.এটি মাঝারি আকারে চির সবুজ বৃক্ষ। গাছের গোড়া থেকে শুরু করে ডালপালা পযর্ন্ত পুষ্পমঞ্জরিত থোকায় থোকায় ফল আসে সেই গাছটির নাম লটকন।ফল গোলাকার। পাকলে এ ফল হলুদ বর্ন ধারণ করে।ফলের খোসা ছাড়ালে ৩/৪ টি রসালো অম্লমধুর স্বাদের ভরপুর মোখরোচক বীজ পাওয়া যায়।ফল হিসাবেই ব্যাপক ভাবে ব্যবহ্নত হয়,লটকন চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া যায়।

বতর্মানে এটি বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে চাষ হচ্ছে যেমন : – নরসিংদী, সিলেট, গাজীপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ জেলা উল্লেখযোগ্য এলাকা।তারমধ্যে নরসিংদী জেলা সদর,শিবপুর,রায়পুরা,বেলাব ও মনোহরদী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হচ্ছে।নরসিংদী লটকনের স্বাদ অত্যন্ত বেশি এবং সারাদেশ ব্যাপি এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।বেলাব উপজেলায় লাল মাটিতে প্রচুর পরিমাণ লটকন হয় এবং সু-স্বাদু অনেক।ফাল্গুন মাসে গাছে ফুল আসে আষাঢ় – শ্রাবন মাসে ফল পাকে।অবস্থান ভেদে গাছের বয়সের উপর ভিত্তি করে গাছ প্রতি ৪ কেজি হতে ১২০/১৩০ কেজি পযর্ন্ত ফলন হয়ে থাকে।লটকন অত্যন্ত পুষ্টিকর ও সু-স্বাদু একটি ফল পরিপক্ক লটকন প্রতি ১০০ গ্রাম শাঁসে আছে ১.৪২ গ্রাম আমিষ,০.৪৫ গ্রাম চর্বি,০.৯ গ্রাম মোট খনিজ পদার্থ,০.৩ গ্রাম লৌহ এবং ৯১ ক্যালরী খাদ্য শক্তি।সাধারণত লটকন কে ভিটামিন বি২ সম্মৃদ্ধি ফলও বলা হয়ে থাকে।নরসিংদী জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জায়গায়ও বানিজ্যিক ভাবে রপ্তানি করা হয়ে থাকে।লটকন চাষ করে কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছে।এটি জনপ্রিয় ফলও বটে তাই লটকন অন্যান্য ফল থেকে বেশি পরিমাণ বিক্রি হয় তাই লটকন চাষিরা ভিষণ খুশি।মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ৩ নং ওয়ার্ডের ডোমনমারা গ্রামের প্রায় ৩ একর জমিতে বানিজ্যিক ভাবে সালাম মাষ্টার লটকন চাষ করে থাকে। তিনি লটকন চাষ করে খুবই খুশি কারন অন্যান্য চাষের চেয়ে লটকন চাষ করে খুবই লাভবান হয়েছেন।সালাম মাষ্টার আরো জানান আগামীতে আরো লটকন চাষ করবেন এভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেন।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে