করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে তহবিল সংগ্রহে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা নিজের ব্যবহৃত ব্রেসলেট নিলামে তুলেছিলেন।
ফেসবুকে ‘Auction 4 Action’ পেজ-এ নিলাম চলল দুইদিন। রোববার (১৭ মে) রাতে সর্বোচ্চ ৪২ লাখ টাকা বিড করে মাশরাফির ব্রেসলেটটি কিনে নিয়েছে বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ)। তবে উপহার হিসেবে মাশরাফিকেই ব্রেসলেটটি দিয়েছে বিএলএফসিএ।
বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান এবং আইপিডিসির সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মমিন উল ইসলাম বলেন,‘মাশরাফি আমাদের অধিনায়ক। তাঁর হাতের একটি স্মৃতি তাঁর হাতেই মানায়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ ব্রেসলেটটি আপনার কাছেই থাকবে। আমরা উপহার হিসেবে এটা আপনাকে দিতে চাই। আমরা একটি অনুষ্ঠান করে আপনার হাতে এ ব্রেসলেটটি তুলে দেব। এর আগে আপনি এটা নিজ হাতেই রাখবেন।’
নিলাম থেকে পাওয়া এই অর্থের পুরোটাই মাশরাফির `নড়াইল ফাউন্ডেশন’ -এর ব্যানারে করোনাভাইরাস দুর্গতদের সাহায্যে খরচ করা হবে। শুধু নড়াইল নয়, মাশরাফি জানিয়েছেন নড়াইলের বাইরের মানুষের জন্য এ অর্থ খরচ করা হবে।
মাশরাফির ব্রেসলেটের ভিত্তি মূল্য রাখা হয়েছিল ৫ লাখ টাকা। গতকাল থেকে শুরু হওয়া নিলামে বিড হচ্ছিল অল্পঅল্প করে। কিন্তু আজ তরতরিয়ে ব্রেসলেটের জন্য বিড করেছেন মাশরাফি ভক্তরা। সন্ধ্যায় সেই বিড ১৩ লাখে পৌঁছে যায়। মাশরাফি লাইভ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ব্রেসলেটের দাম উঠে ১৬ লাখ টাকা। শেষমেশ মাশরাফির অমূল্য ব্রেসলেটটি বিক্রি হয় ৪২ লাখে।
ক্রিকেট মাঠের সফল নেই নেতা এবার মাঠের বাইরেও দেখালেন কারিশমা। ১৮ বছর স্বযত্নে রেখেছিলেন স্টিলের এই ব্রেসলেটটি। তাতে ইংরেজি অক্ষরে খোদাই করে লেখা ‘মাশরাফি।’ প্রিয় এ ব্রেসলেটটি হাত থেকে খুলেছেন কম সময়ই। ১৮ বছর ধরে ক্রিকেটে তাঁর এই পথচলার সাক্ষী হিসেবে রয়েছিল এই ডান হাতের ব্রেসলেটটি।
নিজের ব্রেসলেট নিয়ে মাশরাফি বলেন,‘আমি যখন অনেক ছোট, সিনিয়রদের দেখতাম ব্রেসলেট পরতেন। দুইটা জিনিসে আমার ঝোঁক ছিল, সানগ্লাস ও ব্রেসলেট। কিন্তু বাবার ভয়ে পরতে পারিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শুরুর পরই মনে হলো এখন পরলে হয়তো বাবা কিছু বলবে না। শুরুতে একটা পরেছিলাম কিন্তু ওটা পরে ড্রাইভ দিতে পারতাম না। এরপর এক বন্ধুকে বলি। ও ওর মামাকে দিয়ে এটা বানিয়ে দেয়। এরপর খুব বেশি এটা হাতের থেকে খুলিনি। মাঝে আতাহার ভাই একটা লাল-সবুজ ব্রেসলেট দিয়েছিল। সেটা কিছুদিন পরেছি। এছাড়া অপারেশনের সময়, এমআরআই করার সময় এটা খুলতে হয়েছে। আসলেও ওখানে বেশি যাওয়া হয়েছে বলেই কয়বার হাতের থেকে খোলা হয়েছে তা মনে আছে। এটা খুব সিম্পল একটা ব্রেসলেট। স্টেইনলেস স্টিল।’
এর আগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাকিব, মুশফিক নিজেদের ব্যাট নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন। সাকিবের বিশ্বকাপে ব্যবহৃত ব্যাটটি বিক্রি হয়েছে ২০ লাখ টাকায়। মুশফিকের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ব্যাটটি প্রায় ১৭ লাখ টাকায় কিনে নিয়েছে পাকিস্তানি ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদি।