পারলেন না মোহাম্মদ শামি। হোল্ডারের ফুলটসটা এক্সটা কাভারের ওপর দিয়ে মারতে চাইলেন। কিন্তু রসটন চেজ সামনে ঝুঁকে ক্যাচ নিলেন। দুই হাত প্রসারিত করে হোল্ডার যেন অপেক্ষায় সতীর্থদের উচ্ছ্বাসে মিশে যাওয়ার। ড্রেসিংরুমে দুই হাত বুকের ওপর বদ্ধ করে দাঁড়িয়ে কোহলি, বোঝার চেষ্টা করছেন হলোটা কী আসলে! হলো একটা লো-স্কোরিং ম্যাচ, হলো দুই দলের ধীরলয়ের ব্যাটিং প্রদর্শনী। যেখানে জয়ী দলের নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়রা অ্যান্টিগায় ১৮৯ করেও থামিয়ে দিয়েছে ভারতকে! ৫ ম্যাচের সিরিজটাও বেঁচে রইলো তাই।
সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে রবিবার প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮৯ তোলে ওয়েস্ট উইন্ডিজ। জবাবে টিম ইন্ডিয়ার ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৭৮ রানে। ১১ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হোল্ডার বাহিনী৷ প্রথম ওয়ানডে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর টানা দুই ম্যাচ জেতা ভারত এখন সিরিজে এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে।
১৯০ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ‘মেন ইন ব্লু’। মাত্র ৫ প্যাভিলপিয়নে ফেরেন ধাওয়ান। ক্যাপ্টেন বিরাট কোহলিও এদিন ব্যর্থ হন৷ মাত্র তিন রান করে হোল্ডারের শিকার হন তিনি। চার নম্বরে নামা দিনেশ কার্তিকও(২) ব্যর্থ। ৪৭ তিন উইকেট হারনোর পর দলের হাল ধরেন রাহানে-ধোনি। চতুর্থ উইকেটে ৫৪ যোগ করেন তারা।
রাহানে হাফ সেঞ্চুরি(৬০) করে আউট হন। এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে টিম ইন্ডিয়া৷ ১৭৬ রানে ধোনি(৫৪) আউট হওয়ার পরই দলের হার নিশ্চিত হয়। শেষ পর্যন্ত আর দু’রান যোগ করেই বাকি দুটি উইকেট হারায় বিরাটরা। উইন্ডিজের পক্ষে ক্যাপ্টেন হোল্ডার ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন।
এদিন ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট উইন্ডিজ। ভারতের শক্তিশালী বোলিংয়ের বিরুদ্ধে শুরুটা মন্দ হয়নি তাদের। প্রথম পাওয়ার প্লে’তে ৩১ রান তোলে তারা। ৫৭ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় তারা। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকা ক্যারিবিয়ানরা আর মাথা তুলতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৮৯ রানেই থেমে যায় তাদের ইনিংস। ভারতের পক্ষে উমেশ যাদব ও হার্দিক পান্ডিয়া তিনটি করে উইকেট নেন।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে বাতিল হয়ে গেলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে বড় জয় তুলে নেওয়ার পর রবিবারের ম্যাচে নতুনদের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। সেই মতো তিনটি পরিবর্তন আনা হয়।
ছন্দহীন যুবরাজ সিংকে বসিয়ে খেলানো হয় দীনেশ কার্তিককে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পরিবর্তে দলে ফেরেন রবীন্দ্র জাদেজা। আর ভূবনেশ্বর কুমারকে বিশ্রাম দিয়ে নতুন বল হাতে তুলে দেওয়া হয় মোহাম্মদ সামির। তবু ভারতীয় দলের ছন্দ এতটুকু নষ্ট হয়নি। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলতি সিরিজে খেলছে একেবারে অনভিজ্ঞ তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে। চুক্তি সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন না ক্রিস গেইল, ডোয়েন ব্র্যাভো, কার্লোস ব্রেথওয়েটের মতো তারকারা। ফলে তরুণরাই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের ভরসা।