টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে আজ সোমবার সকাল থেকে নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার চারটি উপজেলার নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল-চরাঞ্চলসহ বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেয়ায় লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের সবক’টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় অসংখ্য মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ব্যারেজ হুমকির মুখে পড়ায় সব গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো বলেন, ব্যারেজ রক্ষার্থে বাইপাসের আশপাশে বসতবাড়ির লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। পানি বাড়তে থাকায় জেলার ৫ উপজেলার অন্তত ৫০ হাজার ফের নতুন করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের ৫৪টি গেট খুলে দেওয়ার পাশাপাশি ব্যারাজ এলাকাসংলগ্ন এলাকায় জারি করা হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। সেই পানি প্রবল বেগে আসছে তিস্তা ব্যারাজের দিকে। ফলে পানির চাপ সামলাতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেটের সবকটি খুলে রাখা হয়েছে।
এদিকে প্রচুর বৃষ্টি আর পানি বৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই এলাকার বন্যাকবলিত লোকজন। এতে ডুবে গেছে নীচু অঞ্চল। বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় লোকজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। এরইমধ্যে প্লাবিত হয়েছে জেলার হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ উপজেলার নদী বেষ্টিত চর ও গ্রামগুলো। এছাড়া পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে।