গত ৩ দিন ধরে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি ধীরগতিতে কমছে। এতে পানি কিছুটা কমলেও টানা ৯দিন ধরে বিপদসীমার ওপর দিয়েই বইছে যমুনা নদীর পানি।
ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়া জেলার পাঁচটি উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগে আরো বেড়েছে।
সোমবার (৬ জুলাই) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রণজিৎ কুমার রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জের শহর রক্ষা বাঁধের হার্ডপয়েন্ট ১৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
এদিকে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, উঁচু স্থান ও স্কুল ঘরে আশ্রিত মানুষ এবং বন্যা কবলিত এলাকার বসতবাড়িতে থাকা পানিবন্দী মানুষদের শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পানি কমার সাথে সাথে নানা দুর্ভোগের মধ্যেও ভাঙ্গন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন যমুনা পাড়ের মানুষেরা।
এ ছাড়া বন্যায় যমুনা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কৃষকের পাট, তিল, আখ, বাদাম, ভুট্টা ও সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। অনেকের ফসলের ক্ষেত পানিতে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত হয়ে যাওয়ায় ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত তারা।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, বন্যায় সিরাজগঞ্জের ৫টি উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের ২১৬টি গ্রামের ১ লাখ ৫৯ হাজার ১৫৩ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩০টি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ এবং ৫ টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২২০টি ঘর-বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ১০৬০টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬৮৪ পরিবার ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় রয়েছে। এরই মধ্যে বন্যাকবলিত মানুষের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১২৫ মেট্রিক টন চাল।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুল হক জানান, জেলার বন্যা কবলিত ৫টি উপজেলার ১১ হাজার ১৭ হেক্টর জমির পাট, তিল ও আখ পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।