রবিবার বিকাল ৪:১৫

৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

২রা রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ শরৎকাল

মেঘনায় ভাঙ্গন, অর্ধশত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল চানপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে মেঘনার ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শনিবার রাতে ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের কালিকাপুর গ্রামের ওয়াসেক মিয়া, বরকত আলী, মনির ও নুরজাহানসহ ৫/৬টি বাড়ী মেঘনা গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে আরো অন্তত: আরো ৩ শত বাড়ীঘর। ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচার জন্য জয়নাল, ধনু মিয়া, হোরা মিয়া, নয়াব আলী, আব্দুল হক, লাক মিয়া, আমিন উদ্দিন, সিরাজ মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, নজীর মিয়া, শীর ইসলাম, করিম মিয়া, হেলাল, দুলাল, ফারুক, আক্তার, হাসিনা, স্বপ্ন, নাজির, শাহজাহান, আছমত মিয়া, নাছির মিয়া, শাহজালাল ও আজিজুর রহমানসহ ২৫/৩০ জন মালিক তাদের বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। এসব বাড়ী-ঘরের ভিটিগুলো মেঘনা গর্ভে তলিয়ে গেছে।

চানপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানিয়েছেন, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে মেঘনায় ব্যাপক খরস্রোত দেখা দিয়েছে। স্রোতের পানি পাড়ে ধাক্কা লেগে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এবছর আষাঢ় মাসে ভারী বর্ষণ না হওয়ায় এলাকার লোকজন ভেবেছিল এবছর হয়তো ভাঙ্গনের পরিমান কম হবে। কিন্তু গত শনিবার রাতে পানির স্রোত তীব্র আকার ধারণ করলে রাত সাড়ে ১১ টায় হঠাৎ ৫/৬টি বাড়ী মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এসময় নদীপাড়ের লোকজনের মধ্যে কান্নাকাটি শুরু হয়। সম্ভাব্য ভাঙ্গনের আশংকায় আশেপাশের বাড়ীর লোকজন তাদের ঘর থেকে আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন মালামাল নিরাপদ স্থানে সরাতে শুরু করে এবং তারা তাদের ঘরগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে ভেঙ্গে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। যাদের ঘর নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে তাদের ভিটিগুলো ভেঙ্গে মেঘনার পানিতে তলিয়ে গেছে। আরো ২/৩ শত বাড়ীঘর হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে এবং এসময় যদি ভারী বর্ষণ শুরু হয় তবে নদী পাড়ের এসব বাড়ীঘর মেঘনা গর্ভে বিলীন হবার আশংকা করছে পাড়ের মানুষ। তিনি আরো জানান, ভাঙ্গনের শিকার মেঘনা পাড়ের পরিবারগুলো এখন খুবই অসহায় অবস্থায় পতিত হয়েছে। তাদের ঘরে খাবার নেই। লোকজন গ্রাম থেকে যা কিছু খাবার সরবরাহ করছে তাই খেয়ে তারা কোন রকমে দিনাতিপাত করছে। সরকারী সাহায্য না পেলে পরিবারগুলো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

জানিয়েছেন, বছরের প্রায় সকল সময় চাঁনপুর ইউনিয়নে মেঘনার ভাঙ্গন অব্যাহত থাকে। গত কয়েক বছরে এই ইউনিয়নের ইমামদীকান্দী নামে একটি গ্রাম মেঘনা গর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। সদাগরকান্দী,  মোহিনীপুরেও কমবেশী ৩/৪শত পরিবার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে। ইমামদীকান্দী গ্রামের ৫/৬শত পরিবার নদীর পূর্বপাড়ে জেগে উঠা চরে তাদের বসতি স্থাপন করেছে। ইমামদীকান্দী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙ্গনের শিকার হয়। সেটিও একই নামে পূর্বপাড়েরচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ভাঙ্গনের কারণে চানপুর ইউনিয়নের কমবেশী ৩ হাজার মানুষ পূর্বপাড়ে জেগে উঠাচরে বসতি স্থাপন করে পার্শ্ববতী নবীনগর উপজেলার বীরকান্দী ইউনিয়নের সদস্য হয়ে গেছে। পূর্বপাড়ে জেগে উঠা চরের মালিক রায়পুরা তথা চানপুর ইউনিয়নের জনগন। চানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই চরের মালিকানা দাবী করে তা যথাযথ প্রক্রিয়ায় রায়পুরা তথা চানপুরের সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছেন।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে