বাংলাদেশ সহযোগিতা চাওয়ায় কয়েক দিন পর্যবেক্ষণ করে অধিকতর নিশ্চিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেহ উদ্দীনকে আটক করেছে ভারতের কাউন্টার টেররিজম এজেন্সি।
আটকের পর গ্রেপ্তার না দেখিয়ে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজেকে মোসলেহ উদ্দীন বলে স্বীকার করেনি। তাই বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দেওয়ার আগে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঢাকায় করা হচ্ছে এই টেস্ট। মোসলেহ উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদেরও ডিএনএ টেস্ট করা হবে।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, গত শুক্রবারেই মোসলেহ উদ্দীনকে আটক করা হয়। তবে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে চাইছে ভারত। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোসলেহ উদ্দীনকে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয় রাখা হয়েছে।
তবে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার গভীর রাতে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে বিথারী থানার বেরি গোপালপুর এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার কাকডাঙ্গা এলাকার একটি অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে গোয়েন্দাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় অতি গোপনীতার সাথে দুই দেশের গোয়েন্দারা মোসলেহ উদ্দীনকে যৌথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। এরপর সেখান থেকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে প্রথমে সে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করে।
তবে বাংলাদেশ কিংবা ভারত সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু জানানো হচ্ছে না।
এর কারণ হিসেবে সূত্র জানায়, আটককৃত ব্যক্তি খুবই ধূর্ত। সে ক্রমাগত নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি করছে। যদিও কাউন্টার টেররিজম এজেন্সি তার পরিচয় নিশ্চিত হতে সফিসটিকেটেড ফেস ডিটেকটিভ প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে।
এদিকে, গত দুই দিনে ভারতের কয়েকটি প্রভাবশালী গণমাধ্যম এবং নিউ ইয়র্কভিত্তিক একটি গণমাধ্যম প্রচার করেছে- মোসলেহ উদ্দিনকে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতীয় এক কর্মকর্তা বলেন, ডিএনএ টেস্টের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে অন্তত আরো তিন থেকে চার দিন লাগবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারতের গোয়েন্দাদের একটি সূত্রের দাবি, লকডাউনের সময় এ দেশ থেকে মোসলেহ উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হতে পারে বলে ঢাকা বিষয়টি ভারতের গোয়েন্দাদের জানায়। ভারতীয় গোয়েন্দারা এই খুনিকে কার্যত তাড়িয়ে সীমান্তের কোনো একটি অরক্ষিত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। তবে সরকারিভাবে কিছুই স্বীকার করা হয়নি।’