আপাতত আর সাধারণ ছুটি নয়, সংক্রমণ ঠেকাতে জোনভিত্তিক লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণের সংখ্যা বিবেচনায় রোববার (৭ জুন) থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে জোনভিত্তিক এ লকডাউনের কর্মপন্থা বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যে কক্সাবাজারকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সারাদেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন এ তিন ভাগে ভাগ করা হবে। সংক্রমণের হার সবচাইতে বেশি হলে ওই এলাকাকে রেড, তারপর ইয়েলো এবং সংক্রমণমুক্ত এলাকাকে সবুজ জোন করা হবে। রেড জোন লকডাউন করা হবে। ওই জোনের জীবন-জীবিকা কিভাবে চলবে তার নির্দেশনাও ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শনিবার (৬ জুন) জানান, সংক্রমণের মাত্রা বাড়লেও আর সাধারণ ছুটির সিদ্ধান্তে ফিরছে না সরকার। কারণ সংক্রমণের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে জীবিকার জন্য সীমিত পরিসরে আমাদের অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত চালু রাখতে হচ্ছে। অফিস আদালতে আমরা ওভাবেই কাজ করছি।
‘ইতোমধ্যে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা কর্মচারী অফিসে আসছেন। ঝুকিপূর্ণ, দূরে থাকেন, বয়স্ক নারী-পুরুষ, গর্ভবর্তীদের আসতে না করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সর্বোচ্চ সতর্কতায় কর্মকর্তারা অফিসে এসে কাজ সেরে দ্রুত চলে যাচ্ছেন। আমাদের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে অনলাইনে। করোনায় আমরা প্রযুক্তির পুরোপুরি সদ্ব্যবহার করছি বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তা ঠেকাতে আমরা জোন ভাগ করে এলাকাভিত্তিক লকডাউনে যাচ্ছি। ৭ জুন থেকেই রাজধানীসহ সারাদেশে সেটা আপনারা দেখতে পাবেন। আশা করছি এর সুফল পাওয়া যাবে।
জানা গেছে, রোববারই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বেশি করোনা আক্রান্ত ঢাকার বিভিন্ন এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করে তা লকডাউন করে দেওয়া হবে। একইভাবে বিভাগীয় শহরগুলোতেও এলাকাভিত্তিক জোন করে লকডাউন করা হবে।
এদিকে সারাদেশে এ সপ্তাহে মহামারি করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। শনিবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮৪৬ জনে। এ সময়ে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ৬৩৫ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৬৩ হাজার ২৬ জনে।
এ পরিস্থিতিতে সংক্রমণ ঠেকাতে করণীয় শনিবারও দফায় দফায় বৈঠক করেছে স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতর।
বৈঠক শেষে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, পুরো দেশে ছুটি ঘোষণার চিন্তা নেই সরকারের। ঝুঁকি বিবেচনায় রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করার দিকেই এগুচ্ছেন তারা।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইইডিসিআর, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিয়ে রোববার থেকেই ঢাকায় জোন ভাগের কাজ শুরু হবে।
অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকার একাধিক জায়গায় কালকেই (রোববার) ভাগ করার একটি প্রচেষ্টা হাতে নেওয়া হয়েছে। রেড জোনগুলোতে সব কিছুই বন্ধ করা হবে।