জাকাত ফেতরার বাইরেও রোজায় অফুরন্ত দান করতেন হজরত রাসুল সা.। বুখারি শরিফে উল্লেখ আছে- আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাসের সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল সা. ছিলেন সবচেয়ে দানশীল। রোজায় জিবরাইল আ.-এর সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রবহমান বাতাসের গতি পেত রাসুল সা.-এর দানে। (হাদীস-৪৭১১ ( অন্যত্র হজরত আনাস রা. বলেন, রাসুল সা. বলেছেন, রোজার মাসই দান-সদকার উপযুক্ত সময়। (তিরমিজি) কল্যাণ কাজের প্রশিক্ষণের মাস রোজা।
অভাবী দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানো অভ্যাস কী আমাদের গড়ে ওঠেছে? নবিজির আদর্শ কতটা আমাদের জীবনে বাস্তবায়ন করতে পারছি? হজরত আয়েশা রা. বলেন, একবার ঘরে একটি ছাগল জবাই করা হলো। পর্যায়ক্রমে অভাবীদের মাঝে এর মাংস বিতরণ করে দেওয়া হলো। অতপর রাসুল সা. জিজ্ঞেস করলেন, জাগলে আর কি বাকি আছে? আয়েশা রা. বললেন একটি হাড়, বাকি সব বিতরণ করে দেওয়া হয়েছে। রাসুল সা. বললেন, তোমার কাছে থেকে যাওয়া হাড়টি ছাড়া সবই পরকালে পাওয়া যাবে (তিরমিজি)।
কত মহান দানশীল নবির উম্মত আমরা, অথচ রোজা এলেও নির্ধারিত ফেতরা-যাকাত আদায় করে ক্লান্ত হয়ে যায়। অফুরন্ত দানের অভ্যাস আমাদের গড়ে ওঠে না। অসহায় নিঃস্বের ব্যথা-বেদনায় মন গলে না! এ বিষয়ে আল্লাহ বলেছেন, পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফেরানোই তোমাদের জন্য কল্যাণ নয় বরং প্রকৃত কল্যাণের পথ হলো যারা আল্লাহ, পরকাল, কিতাব ও নবিদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং অর্থমোহ থাকা সত্বেও স্বজন, এতিম, অসহায়, পথিক আবেদনকারী ও দাসমুক্তি কাজে ব্যয় করে। (সুরা বাকারা, আয়াত১৭৭)
সাদ ইবনে আব্দুল্লাহ সূত্রে রাসুল সা. বলেছেন, কেয়ামতের মাঠে প্রখর তাপে দরিদ্রের জন্য দানই হবে আরশের ছায়া হবে। (ইবনে খুজাইমা, মুসনাদে আহমদ, ১৮০৪৩) অন্যত্র বলেছেন, তোমরা গরিবদের এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো। [বুখারী]
আবু সাইদ খুদরি সূত্রে, রাসুল সা. আরো বলেন, কোনো মুসলমান অপর কোনো বস্ত্রহীনকে কাপড় পরিধান করাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবুজ পোশাক পরাবেন। কোনো মুসলমান অপর ক্ষুধার্তকে আহার করাবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল খাওয়াবেন, কোনো মুসলমান অপরের তৃঞ্চায় পানি পান করাবে আল্লাহ তাকে জান্নাতের সুঘ্রাণযুক্ত পানি খাওয়াবেন। (আবু দাউদ, ১৬৮২)
আসুন ফেতরা-জাকাতের নির্ধারিত সীমায় অফুরন্ত দান করে আল্লাহর বন্ধু হই। গরিব অসহায়ের বন্ধুত্বের মাধ্যমেই আল্লাহর বন্ধুত্বের পরিচয় পাওয়া যায়। সংগৃহীত।