বাংলাদেশকে ৫০০ কোটি ডলার সহায়তা দিচ্ছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। এরমধ্যে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সহায়তা হিসেবে জাপান সরকারের কাছ থেকে এক বিলিয়ন ইয়েন বা প্রায় ৯৩ লাখ ৮৫ হাজার ডলার পাওয়া যাবে। এছাড়া, দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘ইডিসিএফ’ প্রোগ্রামের অধীনে কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নমনীয় ঋণ হিসেবে ৫০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানিয়েছে, উন্নয়ন অংশীদার ও বিভিন্ন দেশ থেকে ১.৭৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এছাড়া, দেশের বিদ্যমান অবস্থায় সরকার বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থার কাছে আগামী তিন অর্থ বছরের জন্য ৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ এবং অনুদান চেয়ে যোগাযোগ করছে।
বিষয়টি নিয়ে বাজেট প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এখন জাপানের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আশা করা যাচ্ছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তার অর্থ তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে। এ সহায়তা নতুন অর্থবছরের বাজেট সহায়তার জন্য বৈদেশিক সহায়তার ১.৭৩ বিলিয়ন ডলারের অংশ। এছাড়া, ২০২১-২২ এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৩.২৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ও অনুদান পাওয়া যাবে বলে আশা করা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের বাজেট পরিকল্পনা করার সময় এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলার জন্য কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্র এবং দাতা সংস্থার কাছে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এসব সহায়তা যাতে দ্রুত পাওয়া যায় সেজন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে।
অর্থ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কোটার প্রায় ৫০ শতাংশই ব্যবহার করা হয়েছে কোভিড-১৯ মোকাবিলায়। যার পরিমাণ ৭৩২ মিলিয়ন ডলার।
সূত্র জানায়, আগামী কয়েক অর্থবছরের বাকি অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার জন্যও আইএমএফকে অনুরোধ করা হবে। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জাপানের অনুদান সহায়তা পাওয়া যাবে—তা ‘অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া হবে।
এদিকে, ইআরডি থেকে সম্প্রতি অর্থ বিভাগকে লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের সঙ্গে আলোচনার সফলতার বিষয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ‘ইডিসিএফ’ প্রোগ্রামের অধিনে কোভিড-১৯ এর মতো মহামারি মোকাবিলার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নমনীয় ঋণ হিসেবে ৫০ মিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছিল। তা দিতে দেশটি সম্মত হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকা ৪১ তম উন্নয়ন সহায়তা ঋণ প্যাকেজের জন্য ২.১৮ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি চূড়ান্ত। যেকোনও দিন এই চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
জাইকার সঙ্গে প্রস্তাবিত ঋণের সুদের হার হবে ০.৯৪ শতাংশ। এছাড়াও রয়েছে ০.০১ শতাংশ পরামর্শ পরিষেবা ফি এবং ০.০২ শতাংশ ফ্রন্ট-এন্ড ফি। ঋণটি ৩০ বছরের মধ্যে ১০ বছরের রিবেটে পরিশোধ করতে হবে।
অবশ্য এখানে উল্লেখযোগ্য, জাপান সরকার বাংলাদেশকে যেসব ঋণ বা অনুদান দিয়ে থাকে তা সহজ শর্তে দেওয়া হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব সহজ শর্তের ঋণ পরবর্তীতে অনুদান হয়ে যায়।