সারা বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ১৪০টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। এর মধ্যে ১৩টি ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলকভাবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। এসব ভ্যাকসিনের মধ্যে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং মডার্নার ভ্যাকসিনকে এগিয়ে রেখেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অন্যদের চেয়ে এ দুটি ভ্যাকসিনের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এরই মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করে দিয়েছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা। পাশাপাশি ভ্যাকসিন বাজার আনতে ১০টি চুক্তি ইতোমধ্যেই করে ফেলেছে তারা। ব্রাজিল গত শনিবার জানিয়েছে, তারা এ ব্যাপারে ১২৭ মিলিয়ন (১২ কোটি ৭০ লাখ) ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করেছে স্থানীয়ভাবে ভ্যাকসিনটি উৎপাদনের জন্য। অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিন কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে এক বছরের জন্য সুরক্ষা দেবে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ খবর জানিয়েছে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মডার্নার ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তৃতীয় পর্যায়ে যাচ্ছে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে। ইতোমধ্যে তারা দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ করে ফেলেছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তারা প্রায় ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডোজ উৎপাদনের কাজ শুরু করবে।
তবে সবার চেয়ে বিভিন্ন বিষয়ে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন এগিয়ে বলে জানিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা।
সম্প্রতি মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী নভেম্বর থেকে তাঁদের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। আগামী মাসে চূড়ান্ত ধাপে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ওপর মডার্নার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জিএসকের সঙ্গে কাজ করছে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান স্যানোফি। বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের কাজ হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে চলতি বছরের শেষদিকে মানুষের ওপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রে সংস্থা ট্রান্সলেট বায়োর সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্যানোফি। বছরের শেষ নাগাদ তাদের ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে যাবে।
এ ছাড়া থাইল্যান্ডে একসঙ্গে সাতটি ভ্যাকসিন তৈরির পরীক্ষা চলছে। বিভিন্ন পদ্ধতিতে এ কাজ চলছে। অক্টোবরের প্রথমে এসব ভ্যাকসিনের একটির মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ শুরু হবে। চুলালঙ্কর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক কিয়াত রাক্সরাঙ্ঘাম জানিয়েছেন, বানরের দেহে প্রথম ইনজেকশনের পর প্রথম রক্ত পরীক্ষায় অ্যান্টিবডি তৈরি হতে দেখা গেছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রাণির ওপর পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল পাওয়া যাবে। এর পরবর্তী পর্যায়ে ১০ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করা হবে, মানুষের ওপর পরীক্ষার জন্য।