শনিবার সন্ধ্যা ৭:৪৬

২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ শরৎকাল

উটের দুধ বিক্রি করেই চলে সংসার

রাজস্থানের রাইকা সম্প্রদায়ের শত বছরের উট পালার প্রথা এখন হুমকির মুখে৷ লাভজনক না হওয়ায় উট পালার উপর থেকে আগ্রহ অনেকের কমে যাচ্ছে৷ তবে তাঁদের আশার আলো দেখাচ্ছেন এক জার্মান৷

রাইকা জনগোষ্ঠী গত কয়েক শতক ধরে রাজস্থানে উট পালন করছে৷ অনেকের বিশ্বাস যে, ঈশ্বর শিব নিজেই এই রাইকা সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছেন, যাঁদের কাজ হচ্ছে শুধু উট পালন করা৷ তবে সময় বদলেছে৷ রাইকাদের প্রথাগত জীবনযাপন এখন হুমকির মুখে৷

কৃষিকাজে এখন মেশিন ব্যবহার করে অনেককিছু করা যায়, যা করতে আগে উটের দরকার হতো৷ ফলে উটের প্রয়োজনীয়তা দ্রুত কমছে৷ গত ত্রিশ বছরে রাজস্থানে উটের বংশবৃদ্ধিও নাটকীয়ভাবে কমেছে৷ ভানওয়ারলাল রাইকার উটের পালও ছোট হয়ে গেছে৷ তাঁর বাবার কাছে এর দ্বিগুন উট ছিল৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই ঐতিহ্য বংশানুক্রমে চলছে৷ কিন্তু যদি আয় না থাকে, তাহলে আমরা এই ঐতিহ্য কিভাবে ধরে রাখবো? তরুণদের জীবিকার আশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যেতে হচ্ছে৷ আমার সন্তানরা স্কুলে যায়৷ আর সেজন্য আমার প্রতিমাসে অনেক টাকা খরচ হয়৷ যদি আমরা উট পেলে আর জীবিকা নির্বাহ করতে না পারি, তাহলে আমরা টিকে থাকবো কিভাবে?”

ইলসা-ক্যোঁহলার-রোলেফসন একজন জাতিবিদ এবং পশুচিকিত্সক৷ হানোয়ান্ত সিং রাঠোরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি একটি সংগঠন তৈরি করেছেন, যেটি উট পালকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে৷ রাইকা এবং তাঁদের উটের জন্য এটি একটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ৷ তিনি বলেন, ‘‘উট পশুচারণ নানাভাবে গাছ সংরক্ষণে সহায়তা করে৷ অনেক গাছ শুধুমাত্র জাবর কাটা পশুর সহায়তায় অঙ্কুরিত হতে পারে৷ এটা একটা প্রাকৃতিক চক্র: মানুষ, উট, বায়োটপ এবং মানসম্পন্ন খাবার উৎপাদন৷”

গত কয়েকশ’ বছর ধরে উট প্রজনন রাইকাদের উপার্জনের মূল উৎস৷ নারী উটগুলোকে তাঁরা প্রজননের জন্য রেখে দেন৷ উটের দুধ খুবই স্বাস্থ্যকর৷ উটপালক এবং তাঁদের পরিবারের খাদ্য তালিকার অন্যতম উপাদান এটি৷ তাঁরা আগে বলতো, উটের দুধ বিক্রি অনেকটা নিজের সন্তান বিক্রির মতো ব্যাপার৷ কিন্তু সেই অবস্থান থেকেও সরে এসেছেন তাঁরা৷

এখন ভানওয়ারলাল রাইকা প্রতিদিন সকালে উটের দুধ পাশের একটি দুধ বিক্রির খামারে নিয়ে যান৷ তিন বছর আগে এলপিপিএস এই খামার চালু করেছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম৷ উট বিক্রি করে ফেলি৷ কিন্তু তখনই এই সংগঠন উটের দুধ বিক্রি শুরু করে৷ ফলে আমি আবার উটের পাল ফিরিয়ে আনি৷ এখন উটের দুধ বিক্রির মাধ্যমে আমি আমার পরিবারের অন্নসংস্থান করতে পারছি৷ এখন এই সংগঠন যদি কাল থেকে আবার দুধ বিক্রি বন্ধ করে দেয়, তাহলে আমার উটের পাল আবার বিক্রি করে দিতে হবে৷”







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে