বৃহস্পতিবার রাত ১১:১০

১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৮ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ গ্রীষ্মকাল

হাওর-অধ্যুষিত এলাকা নিকলী ভাঙনকবলিত ছাতিরচর গ্রাম

কিশোরগঞ্জের হাওর-অধ্যুষিত এলাকা নিকলী উপজেলার ভাঙনকবলিত ছাতিরচর গ্রামে। জমিদারী প্রথা তালুকদারীতে রূপান্তরিত হলে প্রায় ১৮৫০ খ্রিষ্ঠাব্দে কিছু মানুষের বসতি গড়ে উঠে চরের এই হাওড়ে। তালুকদারগন খাজনা আদায়ের জন্য স্থানীয় প্রতিনিধি নিয়োগ করতেন। আর তাদেরকে উপহার হিসাবে দিতেন একটি করে ছাতা। হাওড়ে কোন গাছপালা না থাকায় ছাতা খুব জনপ্রিয় উপহারে পরিনত হয় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায়। চরের এই গ্রামটির পূর্ব কোন নাম না থাকায় আঞ্চলিক ভাষায় গ্রামটির নাম করন করা হয় ছাতিরচর। কাল পরিক্রমায় ছাতিরচর ইউনিয়ন শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয়অনুষ্ঠান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নিজস্ব স্বকীয়তায় আজ সমুজ্জ্বল। নিকলী উপজেলা সদর থেকে ১২ কি.মি. দূরে দুর্গম হাওর এলাকায় নিকলী থানাধীন ৭নং ইউনিয়ন ছাতিরচর গ্রামের অবস্থান। উপজেলা সদর থেকে ববর্ষাকালে নৌকায় শুষ্ক মৌসূমে রিকশা, মটর সাইকেল যোগে যাতায়াত করা যায়, তাছাড়া হিলচিয়া বাজার থেকে রিকশা অথবা নৌকায় যোগাযোগ করা যায়, তবে নৌকা এখানকার প্রধান বাহন। চারদিকে ঘোড়াউত্রা নদীবেষ্টিত গ্রামটিতে দশ সহস্রাধিক লোকের বসবাস। কয়েকটি পাড়া নিয়ে গঠিত একটি গ্রাম নিয়েই গঠিত ছাতিরচর ইউনিয়ন। প্রতিবছর ভাঙনের ফলে ওই গ্রামের মানুষের সংগ্রাম করে জীবন চালাতে হয়। এলাকার অধিকাংশ লোকই দরিদ্র। সারা বছর জীবনের সঙ্গে সংগ্রাম করলেও বছরের একটা সময় পুরো গ্রাম মেতে ওঠে আনন্দ-উল্লাসে। এই সময় তাঁরা একসঙ্গে জড়ো হয়ে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করেন। অথচ এই গ্রামে এতোদিন ছিল না কোনো স্থায়ী বাজার। সরু পায়ে চলার পথের দু’পাশে বসতো প্রতিদিনকার বাজার। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পোহাতে হতো নানা দুর্ভোগ। বছর তিনেক আগে এখানে ৫০ শতাংশ খাস জমির উপর বাজার নির্মাণের প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সার্বিক বিবেচনায় উদীয়মান এই গ্রাম বা ইউনিয়ন বিগত কয়েক বৎসর যাবত খরস্রোতা ঘোড়াউত্রা নদীর ভাঙনের ফলে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়ে গেছে। প্রতি বছর বর্ষাকালে কয়েকশ ঘরবাড়ি ভেঙেই চলে। এই অবস্থা চলতে থাকলে নিকট ভবিষ্যতে গ্রামটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং গ্রামবাসী অসহায় অবস্থায় পতিত হবে। নিকলী উপজেলার মানচিত্র থেকেও হয়তো এই ঐতিহ্যবাহী গ্রামটি (বর্তমানে ইউনিয়ন) হারিয়ে যাবে। আর ক্ষয়ে ক্ষয়ে এই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নেওয়ার নয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে একটি নদীর নিকট মানুষ হেরে বা পরাজিত হওয়া কোনক্রমেই মেনে নেয়া যায় না। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নদী ভাঙনের কবল হতে ছাতিরচর গ্রামটি (বর্তমানে ইউনিয়ন) রক্ষাকল্পে আশু ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন রাখছি।







© সকল স্বত্ব- সমাজ নিউজ -কর্তৃক সংরক্ষিত
২২ সেগুনবাগিচা, ৫ম তলা, ঢাকা- বাংলাদেশ।
ই-মেইল: news@somajnews.com, ওয়েব: www.somajnews.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা বা ছবি অনুমতি ছাড়া নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।

ডিজাইন: একুশে